অতিরিক্ত ডায়েটিং এক ধরনের মানসিক রোগ

over dieting

কেউ কেউ বিশেষ করে অল্প বয়সী মেয়েরা অতিরিক্ত মাত্রায় ডায়েটিং করেন। এমনকি খাবার খাওয়ার পরে গলায় আঙুল দিয়ে বমি করে খাবার ফেলে দেয়। এটা এক ধরনের মানসিক রোগ। এ রোগের নাম এনোরেক্সিয়া নার্ভোসা।

 

এনোরেক্সিয়া নার্ভোসা রোগের বিশেষ লক্ষণগুলো হলো শরীরের ওজন শতকরা ১৫ ভাগ কমে যায় স্বাভাবিক ওজনের চেয়ে। শরীর হালকা রাখার জন্য তীব্র ইচ্ছা জাগে। এমনকি মহিলাদের স্রাব বন্ধ হয়ে যেতে পারে। অধিকাংশ রোগী কম বয়সী মহিলা। বয়সের আধিক্য বিবেচনা করলে দেখা যায় ১৬ বছর থেকে ১৭ বছর বয়সের মধ্যে এই রোগ হয়। এই রোগে নিজের শরীরের আকার এবং ওজন সম্পর্কে ভুল ধারণা মোটা হওয়ার ভয় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার তীব্র বাসনা দেখা দেয়। রোগীরা আহার কম করেন। আবার অনেকে ইচ্ছাকৃত বমি করেন। অতিরিক্ত ব্যায়াম করেন এবং পায়খানা হওয়ার ঔষধের অপব্যবহার করেন। এ ধরনের রোগীরা সব সময় খাবার সংক্রান্ত চিন্তা করেন। তবে অপরকে আপ্যায়নের জন্যই রান্না করেন।

 

এনোরেক্সিয়া নার্ভোসা সাধারণত ব্যক্তিগত ও সামাজিক কারণে হয়ে থাকে। শতকরা ৬ থেকে ১০ ভাগ মহিলারা এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন যাদের ভাইবোনদের এনোরেক্সিয়া নার্ভোসা থাকে। সাধারণের মাঝে এ রোগের প্রকোপ শতকরা ১ থেকে ২ ভাগ। গবেষণায় দেখা যায় যে, বেশীর ভাগ স্কুলগামী বা কলেজগামী মেয়েরা কোন একসময় খাদ্য নিয়ন্ত্রণ করে চলে। সমাজের মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্ত লোকজনের মাঝে শারীরিক ওজন সংক্রান্ত চিন্তা অনেক বেশী। পারিবারিক কারণ এ রোগের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ঝামেলাযুক্ত পারিবারিক সম্পর্ক এই রোগের কারণ হিসাবে মনে করা হয় ।

 

এ ধরণের রোগীকে আশ্বস্ত করা যেন তিনি ঝুকি হীন ভাবে খেতে পারেন যেখানে ওজন বৃদ্ধির কোন সম্ভাবনা নাই। রোগীর খাবারের ব্যাপারে একটা সুষম খাদ্য তালিকা মেনে চলতে হবে যেখানে ৩০০০ কিলোক্যালরি থাকতে হবে। নিশ্চিত হতে হবে যে রোগী নিজে নিজে বমি করেন না বা পায়খানা হওয়ার কোন ঔষধ সেবন করেন না।

 

ওজন বৃদ্ধির টার্গেট ঠিক রাখতে হবে। প্রতি সপ্তাহে অর্ধ কিলোগ্রাম থেকে এক কিলোগ্রাম ওজন বাড়াতে হবে। ওজন সমতায় আসতে সময় লাগে ৮ সপ্তাহ থেকে ১২ সপ্তাহ। রোগীকে কিছু সুযোগ দিতে হবে যেমন দর্শনার্থী, সংবাদপত্র, বই, রেডিও বা টেলিভিশন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দেখতে দিতে হবে।

 

সাইকোথেরাপী বা ফ্যামিলী থেরাপী দেয়া যেতে পারে যদি প্রয়োজন হয়। পরিবারের সবাইকে মানসিক সাপোর্ট দিতে হবে। বোঝাতে হবে যে এগুলো খেলে তার ওজন অত্যধিক হবে না বা মেদ বাড়বে না।

 

Facebook
Twitter
LinkedIn
Pinterest
WhatsApp